লালমনিরহাট জেলা পরিচিতি-
⭕ ভৌগলিক অবস্থান
লালমনিরহাট বাংলাদেশের উত্তরে অবস্থিত সীমান্তবর্তী একটি জেলা। ২৫.৪৮ ডিগ্রি থেকে ২৬.২৭ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮.৩৮ ডিগ্রি থেকে ৮৯.৩৬ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে জেলাটির অবস্থান। এ জেলার উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলা, দক্ষিণে রংপুর জেলা, পূর্বে কুড়িগ্রাম ও ভারতের কোচবিহার জেলা এবং পশ্চিমে রংপুর ও নীলফামারী জেলা। এ জেলার উত্তরে ধরলা নদী ও দক্ষিনে তিস্তা নদী প্রবাহিত।
⭕ লালমনিরহাট জেলার ভৌগলিক পরিচিতি
লালমনিরহাট বাংলাদেশের উত্তরে অবস্থিত সীমান্তবর্তী একটি জেলা। ২৫.৪৮ ডিগ্রি থেকে ২৬.২৭ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮.৩৮ ডিগ্রি থেকে ৮৯.৩৬ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে জেলাটির অবস্থান। এ জেলার উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলা, দক্ষিণে রংপুর জেলা, পূর্বে কুড়িগ্রাম ও ভারতের কোচবিহার জেলা এবং পশ্চিমে রংপুর ও নীলফামারী জেলা। এ জেলার উত্তরে ধরলা নদী ও দক্ষিনে তিস্তা নদী প্রবাহিত।
লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলার ভৌগলিক অবস্থান নিম্নরূপ-
🔰 লালমনিরহাট
আয়তন : ২৫৯.৫৪ বর্গ কিমি
উত্তরে ভারতের কোচবিহার জেলা ও লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা, দক্ষিনে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা ও কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা, পূর্বে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা ও রাজারহাট উপজেলা এবং পশ্চিমে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা ও রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা।
🔰 আদিতমারী
আয়তন : ১৯০.০৩ বর্গ কিমি
উত্তরে ভারতের কোচবিহার জেলা, দক্ষিনে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা, পূর্বে লালমনিরহাট সদর উপজেলা এবং পশ্চিমে কালীগঞ্জ উপজেলা।
🔰 কালীগঞ্জ
আয়তন : ২৩৬.৯৬ বর্গ কিমি
উত্তরে ভারতের কোচবিহার জেলা ও লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা, দক্ষিনে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা ও নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে আদিতমারী উপজেলা এবং পশ্চিমে নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলা।
🔰 হাতীবান্ধা
আয়তন : ২৮৮.৪২ বর্গ কিমি
উত্তরে ভারতের কোচবিহার জেলা ও লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা, দক্ষিনে কালীগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে ভারতের কোচবিহার জেলা এবং পশ্চিমে নীলফামারী জেলার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলা।
🔰 পাটগ্রাম
আয়তন : ২৬১.৫১ বর্গ কিমি
পূর্ব, পশ্চিম ও উত্তরে ভারতের কোচবিহার জেলা এবং দক্ষিনে ভারতের কোচবিহার জেলা ও লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলা।
⭕ লালমনিরহাট জেলার পটভূমি
১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১লা ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন সমাজ কল্যাণ ও মহিলা বিষয়ক উপদেষ্টা (মন্ত্রী) ডঃ শাফিয়া খাতুন কর্তৃক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে লালমনিরহাট মহকুমা ‘জেলা’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। পরে ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ মার্চ লালমনিরহাট সদর থানা ‘উপজেলা’ হিসেবে ঘোষিত হয়। ফলে লালমনিরহাট জেলার অধীনে উপজেলার সংখ্যা দাড়ায় - ৫টি; পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী এবং লালমনিরহাট সদর। এসময় লালমনিরহাট সদর থানার ছিনাই, রাজারহাট এবং ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়ন পাশ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার সাথে যুক্ত হলে নবগঠিত লালমনিরহাট জেলায় ইউনিয়নের সংখ্যা দাড়ায় ৪১টি এবং পৌরসভার সংখ্যা ১টি। তাছাড়া লালমনিরহাট সদর উপজেলার আয়তন দাড়ায় ১০৪ বর্গমাইল।
১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ছিটমহল পাটগ্রাম উপজেলার একটি স্বতন্ত্র ইউনিয়ন হিসেবে পরিগণিত হয় এবং ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ আগস্ট এখানে ইউনিয়ন পরিষদের শুভ উদ্বোধন ঘটে, ফলে লালমনিরহাট জেলায় ইউনিয়ন সংখ্যা দাড়ায় ৪২টি। বর্তমানে লালমনিরহাট জেলায় পৌরসভা ২টি, উপজেলা ৫টি ও ইউনিয়ন ৪৫টি।
ডায়াবেটিক সমিতি, লালমনিরহাট এর সাবেক কার্যালয়ের স্থলে ছিল জেলা প্রশাসকের প্রথম কার্যালয়। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয় স্থানান্তরিত হয় বর্তমান মজিদা খাতুন সরকারি মহিলা কলেজের স্থলে। ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে আবার তা স্থানান্তরিত হয়ে বর্তমান স্থানে চলে আসে।
১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ জানুয়ারি বিদ্যমান জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তথা কালেক্টরেট ভবনের উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লে. জে. হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
⭕ লালমনিরহাট জেলার নামকরণ
লালমনিরহাট নামকরণ সম্পর্কে বিভিন্ন জনশ্রুতি
লালমনিরহাটের নামকরণ নিয়ে ইতিহাস ও লোককথায় একাধিক মত প্রচলিত রয়েছে। নিচে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি মত তুলে ধরা হলো:
লাল পাথরের অনুসন্ধান
উনবিংশ শতাব্দীতে বেংগল ডুয়ার্স রেললাইন নির্মাণের সময় শ্রমিকেরা মাটি খনন করতে গিয়ে লাল রঙের পাথর আবিষ্কার করে। ধারণা করা হয়, এই লাল পাথরের অনুসন্ধান থেকেই এ এলাকার নাম হয় ‘লালমনি’।
লালমনি নামক মহিলার ভূমি দান
আরেকটি মতে বলা হয়, ব্রিটিশ রেল কর্তৃপক্ষ যে মহিলার জমি অধিগ্রহণ করে রেললাইন নির্মাণ করেছিল, তার নাম ছিল ‘লালমনি’। তাঁর অবদানকে সম্মান জানিয়ে স্থানীয় জনগণ জায়গাটির নাম রাখে ‘লালমনি’।
কৃষক বিদ্রোহে লালমনি নামক নারীর আত্মত্যাগ
তৃতীয় মতে, ১৭৮৩ সালে লালমনি নামের এক সাহসী নারী, কৃষক নেতা নুরুলদীনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জমিদার ও ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন এবং প্রাণ দেন। তাঁর বীরত্ব ও আত্মত্যাগের স্মৃতিকে ধরে রাখতে এলাকাটি ‘লালমনি’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে।
পরবর্তীতে, ‘লালমনি’ নামের সঙ্গে ‘হাট’ শব্দটি যুক্ত হয়ে ‘লালমনিরহাট’ নামটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
⭕ লালমনিরহাটের সকল উপজেলার ইউনিয়নসমূহ -
☸️ লালমনিরহাট সদর উপজেলার ইউনিয়ন
মোগলহাট
কুলাঘাট
মহেন্দ্রনগর
হারাটি
খুনিয়াগাছ
রাজপুর
গোকুন্ডা
পঞ্চগ্রাম
বড়বাড়ী
☸️ আদিতমারী উপজেলার ইউনিয়ন
পলাশী
ভাদাই
মহিষখোচা
কমলাবাড়ী
সাপ্টিবাড়ী
সারপুকুর
ভেলাবাড়ী
দুর্গাপুর
☸️ কালীগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন
ভোটমারী
তুষভাণ্ডার
মদাতী
দলগ্রাম
গোড়ল
চন্দ্রপুর
চলবলা
কাকিনা
☸️ হাতীবান্ধা উপজেলার ইউনিয়ন
বড়খাতা
গড্ডিমারী
সিংগীমারী
টংভাঙ্গা
সিন্দুর্না
পাটিকাপাড়া
ডাউয়াবাড়ী
নওদাবাস
গোতামারী
ভেলাগুড়ী
সানিয়াজান
ফকিরপাড়া
☸️ পাটগ্রাম উপজেলার ইউনিয়ন
কুচলিবাড়ী
শ্রীরামপুর
পাটগ্রাম
জগতবেড়
জোংড়া
বাউড়া
দহগ্রাম
বুড়িমারী
⭕ মানচিত্রে লালমনিরহাট
আয়তন: ১২৪১.৪৬ বর্গ কিমি।
অবস্থান: ২৫°৪৬´ থেকে ২৬°৩৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০১´ থেকে ৮৯°৩৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ।
সীমানা: উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, দক্ষিণে রংপুর জেলা, পূর্বে কুড়িগ্রাম ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, পশ্চিমে নীলফামারী ও রংপুর জেলা।
লালমনিরহাট জেলায় ৫৯ টি সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহল রয়েছে। তন্মদ্ধে অন্যতম বৃহৎ হচ্ছে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা। তিন বিঘা করিডরের মাধ্যমে এই সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহল মূল ভূখন্ডের সঙ্গে যুক্ত।
